শরীর নামের অবিশ্বাস্য যন্ত্র

নবম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - বিজ্ঞান অনুশীলন বই - NCTB BOOK

শরীর নামের অবিশ্বাস্য যন্ত্র

একটি যন্ত্রের বিভিন্ন অংশ যেমন আলাদা আলাদা ভাবে বিভিন্ন কাজ করার মাধ্যমে একটি সামগ্রিক কাজ সম্পাদন করে তেমনি আমাদের মানব শরীরকেও একটি বড়ো যন্ত্রের সাথে তুলনা করা যায়। মানবশরীরের বিভিন্ন সিস্টেম বা তন্ত্র নির্দিষ্ট কাজের মাধ্যমে আমাদের পুরো শরীর নামের সিস্টেমটিকে সচল রাখে। এই শিখন অভিজ্ঞতায় আমরা শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা তন্ত্র নিয়ে আলোচনা করব।

প্রথম সেশন
  • এই যে তোমরা এতক্ষণ একে অন্যের কথা শোন, নিজেরা কথা বলো, বই পড়ো, লেখ; তোমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিভিন্ন কাজ করল এই সব কিছু একটি বিশেষ তন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করছে। তোমরা সেটা জানো, স্নায়ুতন্ত্র। স্নায়ুতন্ত্র নিয়ে বিশদ জানার আগে চলো একটা মজার কাজ করা যাক।
  • নিচে বিভিন্ন রঙ এর নাম লেখা আছে। রঙের নাম যে রঙেই থাকুক না কেনো তোমাকে সঠিক রঙটা বলতে হবে। যেমন 'লাল' শব্দ না বলে বলতে হবে বর্ণের রঙ 'সবুজ'। কে কত দ্রুত শেষ করতে পারো স্টপওয়াচ ধরে হিসাব করো।'
লালনীলহলুদকালো
কমলাবেগুনিনীলসবুজ
খয়েরীআসমানিলালহলুদ
টিয়াসাদাকমলাসবুজ
  • এইমাত্র যে খেলাটি খেললে তাকে বলে 'ট্রুপ প্রভাব' মনোবিজ্ঞানী জে. রিডলি স্ট্রপ যিনি ১৯৩০ এর দশকে এই অদ্ভুত ঘটনাটি আবিষ্কার করেছিলেন। এখানে শব্দগুলো নিজেই তোমার দ্রুত রঙ এর নাম বলার ক্ষমতার উপর একটি শক্তিশালী প্রভাব ফেলে।
  • এবার একটু ভেবে দেখো তো, এই খেলাটার সময় তোমাকে পড়তে হয়েছে, দেখতে হয়েছে সবশেষে বলতে হয়েছে। এইসব কিছু মস্তিষ্ক কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে তোমার মনে নিশ্চয়ই এই প্রশ্নই এসেছে?
  • তাহলে এইবার অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে 'স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্কের গঠন' অংশটুকু ভালো করে পড়ে নাও।
  • নতুন কোনো প্রশ্ন মাথায় এলে শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করো। শ্রেণিতে আলোচনা করে ধারণা পরিষ্কার করে নাও।
দ্বিতীয় সেশন
  • গত সেশনে তোমরা একটা মজার কাজ করেছ। এই সেশনও আরেকটা মজার কাজ দিয়ে শুরু করা যাক।
  • আগে নির্দেশনা মনোযোগ দিয়ে বুঝে নাও, যে নির্দেশনা ভালোভাবে বুঝে মাথায় গেঁথে নিতে পারবে সে এইবার ভালো করবে।
  • শিক্ষক তোমাদেরকে কিছু নির্দেশনা দেবেন, তোমাদেরকে সেটার বিপরীত কাজটা করতে হবে। অর্থাৎ তোমরা তোমাদের অবস্থানে থেকেই- শিক্ষক বসতে বললে দাঁড়াবে, দাঁড়াতে বললে বসবে। সামনে তাকাতে বললে পিছনে ঘুরে তাকাবে। এভাবে যে নির্দেশনা মেনে সবচেয়ে বেশিক্ষণ টিকে থাকবে সে বা তারা বিজয়ী।
  • এবার খেলা শুরু...
  • তোমাদের কেমন লাগল বলো তো? এইযে তোমরা এতসব ক্রিয়াকালাপ করলে তার মধ্যে যারা সমন্বয় করতে পেরেছো তাই আজ বিজয়ী হয়েছো। এই সমন্বয়ের কাজটাই করে মস্তিষ্ক। তাই বলে যারা হেরে গেছো তাদের মস্তিষ্ক সবসময় ঠিকভাবে সমন্বয় করে না এমনটা ভাবা কিন্তু বোকামি!
  • মস্তিষ্কের গঠন পড়ে তোমরা জেনেছ, আমাদের দেহের সব ধরনের সংবেদন ও উদ্দীপনা গ্রহণ করে এবং তা পরিবহণের মাধ্যমে উদ্দীপনা অনুসারে উপযুক্ত প্রতিবেদন সৃষ্টি করে স্নায়ুটিস্যু। এই স্নায়ুটিস্যু 'নিউরন' দিয়ে গঠিত যা স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ও কার্যক্রমের একক।
  • চলো এবার তাহলে নিউরনের গঠন ও কীভাবে কাজ করতে সে সম্পর্কে একটু ভালোভাবে জেনে নেওয়া যাক।
  • অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের 'নিউরনের গঠন ও কাজ' অংশ ভালো করে পড়ে নাও।
  • এবার তোমার বিজ্ঞান খাতায় নিউরনের ছবি এঁকে এর বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করো।
তৃতীয় সেশন
  • হঠাৎ করে আঙ্গুলে সুচ ফুটলে অথবা হাতে গরম কিছু পড়লে তুমি দ্রুত হাতটি উদ্দীপনার স্থান থেকে সরিয়ে নাও। এমন ঘটনার অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই তোমার রয়েছে। কিন্তু তুমি কি জানো এইযে চট করে হাত সরিয়ে ফেলো তা তুমি নিজে ইচ্ছাকৃতভাবে সরাও না। এটা আপনা আপনিই হয়! তুমি চাইলেই আচমকা গরম লাগা স্থানে হাতটা আরও ঠেসে ধরে রাখতে পারবে না।
  • এই ক্রিয়ার একটা নাম আছে, 'প্রতিবর্তী ক্রিয়া'। আমরা চাইলেও প্রতিবর্তী ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।
  • চলো প্রতিবর্তী ক্রিয়া সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক, অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে।
  • স্নায়ুতন্ত্র সম্পর্কে তো অনেক কিছু জানলে। এখন নিশ্চয়ই অনুমান করতে পারছো স্নায়ুতন্ত্রের কাজে ব্যাঘাত ঘটলে কী ঘটতে পারে? পাশের সহজপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করে নিচে একটা তালিকা তৈরি করে ফেলো।
  • তোমরা যে তালিকা তৈরি করেছো তার সঙ্গে এবার অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ে লেখা বিভিন্ন স্নায়ুবিক বৈকল্যজনিত রোগের উপসর্গের সাথে তোমাদের অনুমান মিলিয়ে দেখো তো।
  • পরের সেশনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা শুনে নাও।

বাড়ির কাজ

  • পরের সেশনের আগে বাড়ির সবার সাথে আলোচনা করে কিংবা পরিচিত ডাক্তার বা যে কারো কাছ থেকে প্রশ্ন করে আমাদের আশপাশে কি কি দীর্ঘমেয়াদি রোগ দেখা যায় তার একটি তালিকা করে নিয়ে আসতে হবে।
  • প্রচলিত দীর্ঘমেয়াদি রোগের মধ্যে ডায়াবেটিসের নাম যদি এসে থাকে তবে তোমাদের আরেকটা কাজ থাকবে। তা হলো পরিবারে বা পরিচিতদের মধ্যে ডায়াবেটিক রোগী শনাক্ত করে এই রোগের উপসর্গ গুলোর তালিকা করে অনুশীলন বইয়ে নোট নিতে হবে।
  • একইসঙ্গে স্থানীয় কোন ডাক্তারের কাছ থেকে ডায়াবেটিস কেন হয় এবং এই রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায় কি তা জেনে নিয়ে আসবে।
চতুর্থ সেশন
  • স্নায়ুবিক রোগের পাশাপাশি অন্য কী কী দীর্ঘমেয়াদি রোগ সাধারণত দেখা যায় তার একটা তালিকা তৈরি করে ফেলো-
  • তালিকায় নিশ্চয়ই 'ডায়াবেটিস' রোগটির নাম এসেছে।
  • শিক্ষকের নির্দেশে দলে ভাগ হয়ে অথবা একক কাজ হিসেবে পরিবারে বা পরিচিতদের মধ্যে ডায়াবেটিস রোগী শনাক্ত করে এই রোগের উপসর্গগুলোর তালিকা করে নিচে লিখবে।
  • স্থানীয় কোনো ডাক্তারের কাছ থেকে তোমরা ডায়াবেটিস কেনো হয় এবং এই রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায় কী তা জেনে নিয়ে নিচে লিখবে।
  • স্থানীয় ডাক্তারের কাছ থেকে এবং ডায়াবেটিস রোগীর কাছ থেকে তোমরা কয়েকটি শব্দ শুনে থাকবে, 'গ্লুকোজ এবং ইনসুলিন' এই দুটি শব্দ ডায়াবেটিসের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। ইনসুলিন এক প্রকার প্রাণরস বা হরমোন যা শরীরে শর্করা (গ্লুকোজ) পরিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। অগ্ন্যাশয়ে যদি প্রয়োজন মতো ইনসুলিন তৈরি না হয় তবে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্থায়ীভাবে বেড়ে যায়, প্রস্রাবের সাথে গ্লুকোজ নির্গত হয়। এই অবস্থাকে বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস মেলিটাস বলে।
  • ডায়াবেটিস সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার আগে 'হরমোন' সম্পর্কে আরেকটু ভালোভাবে জেনে নেওয়া যাক।
  • অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে 'হরমোন' এবং 'মানবদেহের কয়েকটি মুখ্য নালিবিহীন গ্রন্থির পরিচিতি, কাজ ও নিঃসৃত হরমোন' অংশটুকু পড়ে নিচের ছকটা পূরণ করো।
গ্রন্থির নামঅবস্থানপ্রধান নিঃসৃত হরমোনকাজ
    
    
    
    
    
  • মানবদেহের জৈবিক কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হরমোনের বিশেষ ভূমিকা আছে। সুস্থ দেহে চাহিদা অনুসারে গ্রন্থি থেকে অবিরত ধারায় হরমোন নিঃসৃত হয়। তবে প্রয়োজন অপেক্ষা কম অথবা বেশি পরিমাণ হরমোন নিঃসৃত হলে শরীরে নানারকম অবাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
  • প্রাণরস বা হরমোনজনিত কী কী অস্বাভাবিকতা হতে পারে তা অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে জোড়ায় বসে পড়ো।
  • এবার শিক্ষকের নির্দেশে দলে ভাগ হয়ে যাও, প্রত্যেকটা দল হরমোনজনিত অস্বাভাবিকতা বা রোগ (অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি সম্পর্কিত প্রচলিত রোগগুলো) থেকে বাঁচতে সুস্থ জীবন যাপনের জন্য যেসব সুঅভ্যাস চর্চা প্রয়োজন তার তালিকা করবে ও অন্যদের সচেতন করে তোলার জন্য পোস্টার/ ব্যানার/ফেস্টুন/প্ল্যাকার্ড/কমিক্স বই তৈরি করবে।
  • তোমাদের প্রত্যেকের কাজে যে বিষয়গুলো অবশ্যই থাকবে- ১. রোগটা কেনো হয় ২. রোগের লক্ষণ ৩. রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা ৪. প্রতিরোধের উপায়।
পঞ্চম সেশন
  • রক্ত জীবনীশক্তির মূল। রক্তনালির মধ্য দিয়ে রক্তি দেহের সর্বত্র প্রবাহিত হয় এবং কোষে অক্সিজেন ও খাদ্য উপাদান সরবরাহ করে। ফলে দেহের সব কোষ সজীব এবং সক্রিয় থাকে। যে তন্ত্রের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও অংশে রক্ত চলাচল করে, তাকে রক্ত সংবহনতন্ত্র বলে। মানবদেহে রক্তপ্রবাহ কেবল হৃদপিণ্ড এবং রক্তনালিগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, কখনো এর বাইরে আসে না
  • আরও অনেক কিছু জানার আগে চলো, হৃদস্পন্দন শুনে নেওয়া যাক। যদি সম্ভব হয় তাহলে স্টেথোস্কোপ ব্যবহার করে নিজেদের ও পাশের বন্ধুর হৃদস্পন্দন শোনার চেষ্টা করো। আর যদি এই স্টেথোস্কোপ না পাওয়া যায় তাহলে বন্ধুর বুকে আলতো করে কান পেতে শোনো তো! অনেকেই বলে এটা জীবনের শব্দ! তাই নয়কি!
  • এইযে, হৃদপিণ্ডের শব্দ তোমরা শুনলে এটি রক্তসংবহনতন্ত্রের অন্যতম প্রধান অঙ্গ। হৃদপিণ্ডের গঠন ও কীভাবে কাজ করে তা এবার অনুসন্ধানী পাঠ থেকে একটু বিস্তারিত জেনে নাও।
  • হৃদপিণ্ডের গঠন ও এর মধ্য দিয়ে রক্ত সঞ্চালন পদ্ধতি' পড়ে নাও ভালোভাবে। যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করো।
  • শিক্ষকের নির্দেশে সুবিধাজন সদস্যের দলে ভাগ হয়ে যাও। পরের সেশনে তোমরা সংবহনতন্ত্রের মডেল বানাবে। তাই আলোচনা করে কী কী উপকরণ লাগবে কীভাবে বানাবে তার একটি পরিকল্পনা আজকেই নিয়ে ফেলতে হবে।
  • তোমাদের দলের কোনো একজন সদস্যের খাতায় পরিকল্পনার ছককেটে নাও, উপকরণের তালিকা তৈরি করো। বরাবরের মতো, সহজলভ্য, কমদামী ও পুনঃব্যবহারযোগ্য জিনিস ব্যবহার করে কাজটি করতে হবে।

বাড়ির কাজ:

  • তিনটি গ্লাস নাও (কাচ/প্লাস্টিকের স্বচ্ছ গ্লাস হলে ভালো হয়)। গ্লাস গুলোকে পরপর পাশাপাশি রাখো। ১ম ও ৩য় গ্লাস অর্ধেকটা পানিপূর্ণ করে তাতে আলাদা আলাদা দু রঙের খাবারের রঙ অথবা জলরঙ মিশাও। এবার দুটি টিস্যু কাগজ অথবা সুতিকাপড় নিচের ছবির মতো করে ভাঁজ করে ১ম গ্লাসে একপ্রান্ত রেখে আরেকপ্রান্ত ২য় গ্লাসে এবং আরেকটা টিস্যু কাগজ/কাপড়ের একপ্রান্ত ৩য় গ্লাসের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে অন্যপ্রান্ত ২য় বা মাঝের গ্লাসে রেখে দাও বেশ কিছুক্ষণ সময়ের জন্য।
  • কয়েক ঘণ্টা পর কী পর্যবেক্ষণ করলে তা খাতায় লিখে রাখো।
ষষ্ঠ ও সপ্তম সেশন
  • গতকাল বাড়ির কাজ হিসেবে যে পরীক্ষণটি করেছ সেটার পর্যবেক্ষণ ক্লাসে আলোচনা করো। এর সাথে রক্ত পরিবহণের কোনো সম্পর্ক আছে কী?
  • অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে “রক্তবাহিকা” অংশ পড়ে প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করো।
  • তুমি নিশ্চয়ই কৈশিক জালিকার সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছো! তাহলে অন্য দু ধরনের রক্তবাহিকা- ধমনি ও শিরা কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে হৃদপিণ্ডের মডেল তৈরি করা প্রয়োজন।
  • এবার দলে বসে হৃদপিণ্ড ও রক্তসংবহনতন্ত্রের মডেল বানিয়ে ফেলো।
  • মডেল বানানো শেষে প্রত্যেকটা দল তাদের মডেল উপস্থাপন করো এবং হৃদপিণ্ড কীভাবে কাজ করে, ধমনী ও শিরা কীভাবে অক্সিজেন ও কার্বনডাইঅক্সাইডসমৃদ্ধ রক্ত হৃদপিণ্ড-ফুসফুস-সারা দেহে ছড়িয়ে দেয় তা ব্যাখ্যা করো।
  • অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে রক্তচাপ, কোলেস্টরল, লিউকোমিয়া, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি রক্তসংবহনতন্ত্রের রোগের কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিকার-প্রতিরোধ সম্পর্কে জোড়ায় বসে পড়ে নাও।

বাড়ির কাজ

  • রোগীর প্রতিরোধ এবং প্রতিকারে আমরা অনেক ওষুধ ব্যবহার করে থাকি। এই ওষুধগুলো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নেয়া হয় কি না, কী কী ধরনের ওষুধ নেয়া হয়, সেই বিষয়ে তোমরা তোমাদের পরিবার বা কোন ফার্মেসির কর্মীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে আসবে। বিশেষ করে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের তথ্যর উপর জোর দিতে হবে।
  • ৫ বা ৬ জনের দলে ভাগ হয়ে এলাকার বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য একটি সমীক্ষা করা। সেজন্য প্রশ্নপত্র/প্রশ্নমালা বানিয়ে ফেলো তোমাদের খাতায়/নোটবইয়ে।
  • কিছু নমুনা প্রশ্ন নিচে দেওয়া হলো। তোমরা প্রয়োজনীয় আরও প্রশ্ন যোগ করে সমীক্ষা চালাতে পারো।
ফার্মেসির নাম/দোকান নং 
এখানে কী অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রয় করা হয়?হ্যাঁ / না
অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রয়ের লাইসেন্স আছে?হ্যাঁ / না
কোন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক বেশি বিক্রয়  হয়?

১. 

২. 

৩.

ক্রেতা সম্পূর্ণ কোর্সের ওষুধ কেনে?হ্যাঁ / না
অ্যান্টিবায়োটিকের দায়িত্বহীন ব্যবহার সম্প- কে আপনি কী জানেন ও সচেতন?হ্যাঁ / না
অষ্টম সেশন
  • জীবাণু সংক্রমণরোধে অ্যান্টিবায়টিক ব্যবহার করা হয়। তোমরা কী কোনো অ্যান্টিবায়টিকের নাম জানো? বা এটা কীভাবে কাজ করে?
  • মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করে? অনুসন্ধানী পাঠ বই এর 'মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অংশটুকু পড়ে ধারণা স্পট করে নাও।
  • শরীরের প্রতিরোধী ব্যবস্থা কাজ না করলে আমরা ওষুধের শরণাপন্ন হই। ওষুধের বিভিন্ন ধরনের মধ্য একটি হলো অ্যান্টিবায়োটিক। এবার কাজ হলো, অ্যান্টিবায়োটিকের দায়িত্বহীন ব্যবহারের ফলে কী সমস্যা দেখা দিচ্ছে?
  • তোমাদের কখনো না কখনো জ্বর এসেছে। তখন তোমাদের কীভাবে যত্ন নেওয়া হয়েছে বলো তো। জ্বর কেন আসে তা কী বলতে পারবে? শ্রেণিকক্ষে আলোচনা করো।
  • জ্বর কী একটা রোগ নাকি রোগের লক্ষণ? কী মনে হয়? আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে তোমরা জানো? চলো একটু যাচাই করে নেওয়া যাক।
  • শিক্ষক ও অন্যান্য সহপাঠীদের সঙ্গে সক্রিয় আলোচনায় অংশ নাও।
  • একইসাথে অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের 'মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা' অংশটুকু ভালো করে পড়ে নাও।
  • শরীরের কোন তন্ত্র কোন ধরনের প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে তোলে তা নিয়েও আলোচনা করো। নিজেদের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে কীভাবে কার্যকর রাখা যায় তা নিয়ে ভেবে নিচে লেখো।সবশেষে শিক্ষকের নির্দেশে দলে ভাগ হয়ে অ্যান্টিবায়োটিক সহ বিভিন্ন ওষুধের দায়িত্বশীল ব্যবহারের উপর নীতিমালা তৈরি করবে এবং তা প্রচার করবে। তোমরা পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট বানাতে পারো। তবে তার আগে তোমাদের প্রস্তাবিত নীতিমালা শ্রেণিকক্ষে সবার সাথে আলোচনা করো এবং নিচে টুকে রাখো।

 

Content added By
Promotion